সাদাত এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ প্রকল্প প্রতিবেদন

প্রকল্পের নাম ও ঠিকানাঃ প্রকল্পটির নাম সাদাত এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ। ২৭-১০-২০১৪ইং তারিখে শেরপুরের প্রাণকেন্দ্র হাওড়া নিজ, ৭নং ভাতশালা, শেরপুর সদর, শেরপুরে প্রকল্পটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পটির স্বতাধিকারী তরুণ শিল্পপতি ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ সাদুজ্জামান সাদী, পিতা: আলহাজ্ব মোঃ জয়নাল আবেদীন, সাং: ঢাকলহাটী, শেরপুর টাউন, শেরপুর।
প্রকল্প বিবরণঃ হাওড়া নিজ, সাপমারি ভাতশালা, শেরপুর সদর, শেরপুরে অবস্থিত সাদাত এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ মৎস্য প্রকল্পের জমির পরিমাণ, মাছের নাম, মাছের পরিমাণ, গাছের নাম, গাছের সংখ্যা, বার্ষিক উৎপাদনের পরিমাণ, কর্মজীবিলোকের সংখ্যা, মাছের খাদ্যের ধরণ এবং বিবরণ ও হ্যাচারীর বিবরণ নিচে দেওয়া হলোঃ
(ক) জমির পরিমাণঃ সাদাত এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ হাওড়া নিজ, ৭নং ভাতশালা, শেরপুর সদর, শেরপুরে সম্পূর্ণ অনাবাদি ও ডোবা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই প্রকল্পটি ৫৮ একর জমির উপর অবস্থিত। প্রকল্পটিকে ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। অত্র এলাকার অনাবাদি ও ডোবা ভূমি উন্নয়ন করে মৎস্য প্রকল্প সম্প্রসারিত করা হবে।
(খ) পুকুর সংখ্যাঃ বর্তমানে সাদাত এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ মৎস্য প্রকল্পে ৩০টি পুকুর খনন করে মৎস্য চাষ করা হচ্ছে। যা ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারণ করা হবে।
(গ) মাছের নাম ও বিবরণঃ সাদাত এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ মৎস্য প্রকল্পে বর্তমানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন্ প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছে। তেলাপিয়া-২০০০০০, পাঙ্গাস-৬০০০০,     রুই-১০০০০০, কাতলা-১০০০০০, মৃগেল-৫০০০০, কারফু-৫০০০০, শিং-৫০০০০,      মাগুর-৫০০০০, বাইম-৫০০০০, গ্রাসকার্প-৫০০০০, বাউশ-৫০০০০, গুলশা-৫০০০০,   পাবদা-৫০০০০, সিলভার-৫০০০০, স্বরপুটি-৫০০০০, পাবদা-৫০০০০ ইত্যাদি মাছ প্রকল্পের বিভিন্ন পুকুরে চাষাবাদ করা হচ্ছে।
(ঘ) গাছের নাম ও সংখ্যাঃ সাদাত এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ মৎস্য প্রকল্পে বিভিন্ন প্রকার ফলজ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষের চাষ করা হচ্ছে। এসব বৃক্ষ পরিবেশকে রক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখিদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হবে। ফলজ বৃক্ষের উৎপাদিত ফল অত্র এলাকার পাশাপাশি জেলার চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে। বনজ বৃক্ষসমূহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করবে। ঔষধি বৃক্ষ ঔষধের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হবে। বর্তমানে প্রকল্পটিতে লেবু-৫০০০, পেঁপে-৫০০০, লতিরাজ কচু-৫০০০, আম-২০০, জাম-১০, কাঠাল-১০, আমড়া-১০, লেচু-১০, ছফেদা-১০, ড্রাগনফল-২০০, বকফুল-৬, এলাচ-৫০, পুদিনাপাত-২০০, দুরুচিনি-২০, লং-১০, গুলমরিচ-১০, চেরি-৬, অরবড়ই-১০, সুপারি-১০০, মেহেদী-৫,     বেল-২০, আমলকি-১০, হরতকি-১০, বহেরা-১০, অর্জুন-১০, ডেফল-৫, সাতকড়া-৫, কামরাঙ্গা-৫, তাল-৫, তুরুপচ-াল-৫, নাসপাতি-১০, জারুল-১০, সোনালী-৫, আগর-২০, জলপাই-১০, হলুদ-১০, আদা-১০, কলা-২০, তেসপাতা-৫, কটবেল-১০, পেয়ারা-২০০, চালতা-৫, জামরুল-১০, তেতুল-৬, নারিকেল-১০, সফেদা-১০, ডালিম-১০, আতা-১০, বেদনা-১০,  নিম-১০০, শরিফা-১০, কমলা-১০, আনারস-১০, গাব-১০, চন্দন-১০, করমচা-১০, ডুমুর-১০, কাউফল-১০, খেজুর-১০, আখ-৫০, থৈকল-৫, আঙ্গুর-১০, বাঁশ-২০ গাছ রোপন করা হয়েছে।
(ঙ) খাদ্য উৎপাদনঃ প্রকল্পের মৎস্য সম্পদের জন্য হ্যাচারি, ষ্টার্টার, গ্রোয়ার ও ফিনিসার ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের ডুবন্ত খাদ্য নিজস্ব কারখানায় উৎপাদন করা হয়ে থাকে। নতুনভাবে আরও একটি চায়না থেকে আমদানিকৃত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ভাসমান খাদ্য মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে নিজেদের খাদ্যের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন মৎস্য খামারের মাছের খাবারের চাহিদা পূরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
(চ) গরুর খামারঃ দুধ ও আমিষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রকল্পে গরুর খামার স্থাপন করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন উন্নতমানের গাভী যেমন: হলিষ্টিক, ফিজিয়ান, জার্সি ও সিন্ধি জাতের গাভী পালন করা হচ্ছে। এই খামার থেকে প্রতিদিন প্রায় ১২০ লিটার দুধ উৎপাদিত হচ্ছে। যা স্থানীয় দুধের চাহিদা পূরণ করতে সহায়তা করছে। এছাড়া উক্ত খামারে দেশীয় ষাড় মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। এতে নিজস্ব খাদ্য ও প্রকল্পে উৎপাদিত ঘাস গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোনও প্রকার ঔষধ অথবা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় না।
(ছ) কবুতর খামারঃ এই প্রকল্পটিতে বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর যেমন: লক্ষ্যা, বিউটি, সার্টিং, ফিলব্যাক, বাগদাদী হোমার, কিং, সর্টফেছ, মুক্ষি, লোটন, নান, বল, হেলমেট, সিরাজী, জেকোবিন, গিরিবাজ, ঝর্না, পোর্টার ইত্যাদি পালন করা হচ্ছে।
(জ) অন্যান্য বিবরণঃ প্রকল্পে টার্কিশ মোরগ, ফাইটার মোরগ, চীনা মোরগ, খরগোস, গরু, ছাগল, রাজহাঁস, হাঁস, কালিম পালন করা হচ্ছে। পাশপাশি অন্যান্য পাখিদের নিরাপদ অভয়াশ্রম হিসেবে প্রকল্পটিকে গড়ে তোলা হবে। প্রকল্পে একটি বাঁশঝাড় তৈরি করা হবে যেখানে বক, অতিথি পাখি ও অন্যান্য পাখিদের প্রজনন ক্ষেত্র ও বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এছাড়াও প্রকল্পের মধ্যে একটি লেক তৈরি করা হয়েছে।
ভবিষ্যত পরিকল্পনাঃ উক্ত প্রকল্পে একটি হ্যাচারি ও একটি মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্ট নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যা জেলার মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বার্ষিক উৎপাদনের পরিমাণঃ সাদাত এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ মৎস্য প্রকল্পে মৎস্যখাত থেকে প্রতিবছর ২০,০০০ মেট্রিকটন মৎস্য সম্পদ আহোরিত হবে। যা শেরপুর জেলার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন্ জেলার মৎস্য চাহিদা পূরণ সহায়তা করবে। প্রকল্পের বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ থেকে লেবু গাছ থেকে বছরে প্রায় ১,০০০ মেট্রিকটন লেবু, পেঁপে গাছ থেকে ৮,০০০ মেট্রিকটন পেঁপে, লতিরাজ কচু থেকে ৫০০ মেট্রিকটন কচু ও অন্যান্য গাছ থেকে প্রায় ৫,০০০ মেট্রিকটন ফল উৎপাদিত হবে। সাদাত এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ মৎস্য প্রকল্পের ভাসমান খাদ্য মিল থেকে প্রতি বছর প্রায় ৩,৬৫০ মেট্রিকটন এবং ডুবন্ত খাদ্য মিল থেকে প্রতি বছর ২,১০০ মেট্রিকটন মাছের খাদ্য উৎপাদিত হবে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টিঃ বর্তমানে প্রকল্পটিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০০জন মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। যা অত্র এলাকার দারিদ্র বিমোচনে সহায়তা করবে। প্রকল্পের মৎস্যচাষ, খাদ্য মিল, গাছ রক্ষনাবেক্ষণ ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে নারীদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এতে নারীরা নিজেদেরকে স্বাবলম্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। এছাড়াও এই প্রকল্পের মাধ্যমে অত্র এলাকার মৎস্যচাষী, কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ও সহযোগীতা করা হচ্ছে ।